ইয়াছিন আরাফাত, স্টাফ রিপোর্টার
কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া আট সাংবাদিকের উপর প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সাংবাদিকদের সাথে তাদের স্বজনসহ মোট ১২ জন আহত হন। হামলাকারীরা সাংবাদিকদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, ক্যামেরা ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
আহত সাংবাদিকরা হলেন
দৈনিক দিনকাল প্রতিনিধি পারভেজ সরকার,এশিয়ান টিভি প্রতিনিধি নেছার উদ্দিন,দৈনিক আজকের কুমিল্লা প্রতিনিধি সোহরাব হোসেন,দৈনিক ডাক প্রতিদিন প্রতিনিধি মো. আনোয়ার হোসেন,দৈনিক আমার দেশ প্রতিনিধি আবু বক্কর ছিদ্দিক,দৈনিক কালবেলা প্রতিনিধি জহিরুল ইসলাম মারুফ,দৈনিক ভোরের দর্পণ প্রতিনিধি মো. শাহজালাল,
এটিএন (এমসিএল) নিউজ প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম সজিব।
এ ছাড়া সাংবাদিক সোহরাব হোসেনের বাবা মো. জাকির হোসেন (৫০), মা নার্গিস বেগম (৪২), স্ত্রী বৃষ্টি আক্তার (২০) এবং ছোট বোন রুমি আক্তার (১৮) হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাহাবাদ ইউনিয়নের উটখাড়া মাজারের খাদেম মৃত আব্দুল খালেক ফকিরের স্ত্রী কমলা খাতুনের পরিবারের সাথে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী শাহেব বাড়ির শাহজাহানের পরিবারের বিরোধ চলছিল। এরই জেরে একাধিকবার হামলা, ভাঙচুর ও মামলা-মোকদ্দমার ঘটনা ঘটে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর শাহজাহান তার প্রভাব খাটিয়ে কমলা খাতুনের বসতবাড়ির একমাত্র চলাচলের রাস্তা পাকা দেয়াল তুলে বন্ধ করে দেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পক্ষ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দেবিদ্বার থানায় অভিযোগ দায়ের করে। বিষয়টি তদন্ত শেষে স্থানীয় ইউপি সদস্য লিটন মিয়াকে সালিসের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় এলাহাবাদ পূর্বপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে সালিস ডাকা হয়। সালিস শুরুর আগেই অদূরে হাকিম মিয়ার চায়ের দোকানে বসে সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ করছিলেন। এ সময় শাহজাহান, জসীম উদ্দিন, সাগর, মজলু ও বিল্লালের নেতৃত্বে ২৫-৩০ জন দুর্বৃত্ত অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। সাংবাদিকরা কারণ জানতে চাইলে কোন উত্তর না দিয়ে তাদের উপর নির্বিচারে মারধর চালানো হয়।
আমার দেশ পত্রিকার প্রতিনিধি আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন,
আমরা ৮ সাংবাদিক রাস্তাটি বন্ধ করার ঘটনায় সরেজমিন খোঁজ নিতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ করে একদল লোক আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা কিছু না বলেই আমাদের মারধর করে এবং মোবাইল, ক্যামেরা ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য লিটন মিয়া জানান, সালিস শুরুর আগেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাংবাদিকদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন।
দেবিদ্বার থানার তদন্ত কর্মকর্তা মো. মাঈনুদ্দিন বলেন,
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের খোঁজখবর নিয়েছে। লিখিত অভিযোগ পাওয়া মাত্রই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রকাশ্য দিবালোকে সাংবাদিকদের উপর এ বর্বরোচিত হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক মহলসহ সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠেছে সর্বমহল থেকে।
সম্পাদক : ইয়াছিন আরাফাত, মোবাইল : ০১৭৯৫-৬২৬২৪০, প্রধান কার্যালয়: চকবাজার, ছাতিপট্রি
শাখা: চান্দিনা থানার সামনে, মসজিদ মার্কেট (২য় তলা) চান্দিনা, কুমিল্লা
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত